Wednesday, August 6, 2014

বিচারক রবীন্দ্রনাথ

রবীন্দ্রনাথ ছিলেন বহুমুখী প্রতিভাসম্পন্ন মনীষী - একাধারে কবি, গল্পকার, ঔপন্যাসিক, প্রাবন্ধিক - অন্যদিকে অসাধারণ গান বাঁধতে পারতেন, ভালো নাটক লিখতে পারতেন, আর  ভালো ছবি আঁকতেন। একবার তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিলো, What is the greatest strength of your character? উত্তরে তিনি বলেছিলেন, Contradictions. আবার জিজ্ঞাসা করা হয়েছিলো, What is the greatest weakness of your character? উত্তরে রবীন্দ্রনাথ হেসে বলেছিলেন, Contradictions. 

এই Contradictions-ই যে রবীন্দ্রনাথকে রবীন্দ্রনাথ  করেছিলো, সে বিষয়ে সন্দেহ নেই। যে যুগে রাজা-জমিদাররা একশো টাকার নোট জ্বালিয়ে সিগার ধরাতেন, বাড়ির পোষ্য বিড়ালের বিয়ে দিতেন লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে, সেই যুগেই রবীন্দ্রনাথকে তাঁর বড়ো মেয়ের বিয়ের দশ হাজার টাকা বরপণ যোগাড় করতে মোতিচাঁদ নাখতার নাম জনৈক মাড়োয়ারী মহাজনের কাছে শতকরা সাত টাকা সুদে টাকা ধার করতে হয়েছিলো। অথচ তিনি তখন দু'একটা নয়, পাঁচ-পাঁচটা তালুকের জমিদার। সেই সামন্ততান্ত্রিক যুগে দাঁড়িয়ে রবীন্দ্রনাথ বলেছিলেন, 'আমার জন্মগত পেশা জমিদারী। কিন্তু আমার স্বভাবগত পেশা আসমানদারী। এই কারণে জমিদারির জমি আঁকড়ে থাকতে আমার অন্তরের প্রবৃত্তি নেই...'   


জমিদার হওয়ার দরুন রবীন্দ্রনাথের নিজস্ব 'কাছারি' ছিলো, যেখানে নিয়মিত বিচারসভা বসতো। নানান অভাব অভিযোগ নিয়ে প্রজারা আসতো তাদের জমিদার হুজুরের কাছে বিচার প্রার্থী হয়ে। খাজনা না-দেওয়া প্রজাদের ধরে আনা হতো সেই বিচারসভায় - ধরে আনা হতো বিদ্রোহী প্রজাদেরও। জমিদার হুজুর তাদের বিচার করতেন। অনেক চতুর, অনেক অবাধ্য, অবিমৃশ্য দুর্বিনীত প্রজার বিচার করতে হয়েছে রবীন্দ্রনাথকে। কিন্তু তিনি কেমন ছিলেন? কেমনই বা  বিচার করতেন তাঁর অবাধ্য দুর্বিনীত প্রজাদের? 

রবীন্দ্রনাথের এই ভূমিকার সাথে আমরা অনেকেই তেমন পরিচিত নই। আর সেই জন্যেই আজকের এই পোস্ট, 'বিচারক রবীন্দ্রনাথ' - বিচারক হিসাবে রবীন্দ্রনাথের জীবনের নানান ঘটনার মধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা এখানে তুলে ধরা হলো।  





No comments:

Post a Comment