Sunday, August 3, 2014

কাশী কবিরাজের গল্প & its Trivia

বাংলা সাহিত্যের অমর কথাশিল্পী বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ্যায়ের অসংখ্য, অসাধারণ সৃষ্টিগুলির মধ্যে কোনটি সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়, তা তর্কসাপেক্ষ। কিন্তু তাঁর রচিত সবকটি ভৌতিক গল্পই চিরকাল আমাদের মনে বিশেষ সমীহের সৃষ্টি করে এসেছে। ঈশ্বরের অসীম কৃপায় আমি সেই বিভূতিভূষণের পাদপদ্মে পুষ্ট "হরিনাভি ডি. ভি. এ. এস" স্কুলে ছাত্র হিসাবে পড়াশোনা করার অসীম সৌভাগ্য লাভ করেছিলাম। এই বিদ্যালয়ের একটি অংশের নাম তাঁর স্মরণে, নামকরণ করে রাখা হয়েছে। অবশ্য আমার স্কুলজীবন শুরুর অনেক আগেই তিনি বিদায় নিয়েছিলেন। 

Harinavi D.V. A. S. High School
যাই হোক, এই পোস্টে আমি তাঁর রচিত "কাশী কবিরাজের গল্প" সম্পর্কে কিছু অজানা তথ্য তুলে ধরতে চেয়েছি। 

ভবঘুরে বিভূতিভূষণ জীবনে যেখানে যেখানে যেতেন, সেখানকার প্রকৃতি এবং মানুষকে তাঁর সাহিত্যের মধ্যে অসীম মমতায় ধরে রাখতেন, ঠিক যেমন করে কোন সুদক্ষ চিত্রকর, ছবির মধ্যে তাঁর নিজস্ব ভাবনা ধরে রাখেন। তিনি দৃড়ভাবে বিশ্বাস করতেন অলৌকিকে - তাই তিনি যেখানেই যেতেন, সংগ্রহ করে নিতেন সেখানকার ভৌতিক ও অলৌকিক ঘটনাগুলিকে।  

কাশী কবিরাজের গল্পটি তিনি লিখেছিলেন "অভিষেক" পূজাবার্ষিকীর জন্যে - কিন্তু গল্পটি প্রকাশের সময় দেখা গেলো যে বার্ষিক "উদয়ন"-এর জন্যেও তিনি "কবিরাজের  বিপদ" নামে একটি গল্প পাঠিয়েছিলেন এবং সেটি যথাসময়ে সেখানে প্রকাশিতও হয়ে গেছে। দুটি গল্পের নাম ও চরিত্রগুলির নাম আলাদা আলাদা হলেও, এই দুই গল্পের ঘটনা আসলে কিন্তু একই। সংশয়ে প'ড়ে "দেব সাহিত্য কুটীর"-এর শ্রীমান সুবোধচন্দ্র মজুমদার অগত্যা কাশী কবিরাজের গল্পের মূল পাণ্ডুলিপিটির দ্বারস্থ হলেন, এবং যথাসময়ে অভিষেক পূজাবার্ষিকীতে প্রকাশিত হলো তাঁর লেখা সেই "কাশী কবিরাজের গল্প"টি

কাশী কবিরাজের গল্পটি বিভূতিভূষণ শুনেছিলেন স্বয়ং কাশী কবিরাজের মুখ থেকেই - আর যেমন শুনেছিলেন, ঠিক তেমনই লিপিবদ্ধ করে রেখেছিলেন। সেই মূল গল্পেরই শিল্পরূপ হলো উদয়ন-এ প্রকাশিত "কবিরাজের  বিপদ" তাই সেদিক দিয়ে দেখতে গেলে বাংলা সাহিত্যের জগতে এই "কাশী কবিরাজের গল্প" যে বিশেষ মূল্যবান, তা অনস্বীকার্য। বিভূতিভূষণের গল্পের খসড়ার নমুনা হিসাবে এটি আলাদা করে মুদ্রণের প্রয়োজন ছিলো অবশ্যই।   


তবে, "ভায়া, এগুলো কি সত্যিকারের কোনো তথ্য ? না কি...." - পাঠকের মনে এরকম কোনো সন্দেহ জাগা স্বাভাবিক এবং সেক্ষেত্রে পাঠককে এই গল্পের শেষ পাতা পর্যন্ত পড়ে দেখতে হবে।      

বিভূতিভূষণ দৃড়বিশ্বাসী ছিলেন যে মানুষ একদিন আধুনিক বিজ্ঞানের কল্পনাতীত পরলোক-কেও ঠিক আবিষ্কার করে ফেলবে। আর সেই অচেনা জগতের রহস্যময় সংসারযাত্রার প্রমাণও আমরা একদিন না একদিন পাবো। জীবিত সন্তানের প্রতি মৃতা মাতার যে উৎকন্ঠার কথা তিনি তাঁর এই গল্পে তুলে ধরেছিলেন, তা কোন কল্পনাপ্রসূত নয় - বরং তাঁর নিজস্ব বিশ্বাস থেকেই উদ্ভুত। 

আসুন - আবার করে পড়া যাক বিভূতিভূষণের সেই অসাধারণ ভৌতিক গল্পটি, আদি ও অকৃত্রিম "অভিষেক" পূজাবার্ষিকী থেকে।   




1 comment: