"আমপাতা জোড়া জোড়া,
মারবো চাবুক ছুটবে ঘোড়া
ওরে বিবি সরে দাঁড়া
আসছে আমার পাগলা ঘোড়া -
পাগলা ঘোড়া ক্ষেপেছে ,
বন্দুক ছুঁড়ে মেরেছে -
অল রাইট ভেরি গুড,
সাহেব খায় চা-বিস্কুট"
(প্রচলিত)
"ছোটবেলা" মানেই অনেক কথা, অনেক স্মৃতি - বেশীরভাগই অনাবিল সুখের স্মৃতি, যার বেশ কিছু অংশ জুড়ে আছে হরেক রকমের গল্পের বই, আর অবশ্যই মোটা মোটা দেব সাহিত্য কুটিরের পূজাবার্ষিকী।
সারাটা বিকেল মাঠ চষে ধুলো মেখে খেলার পর সন্ধ্যে গড়িয়ে গেলে আমরা দঙ্গল বেঁধে হাজির হতাম "হরির লুঠের" বাতাসা লুঠতে। গোবরজল দিয়ে মোছা ঝকঝকে তকতকে, পরিষ্কার উঠোনের চণ্ডী-মণ্ডপটার সামনে বেতের ধামা-বোঝাই বাতাসা নিয়ে বন্ধুর ঠাকুমা থাকতেন দাঁড়িয়ে। আর তাঁর পিছনেই অধীর আগ্রহে থাকতো এক দঙ্গল উঠতি ছেলেদের দল, অর্থাৎ আমরা, যে-যেখানে পারি যেমন ভাবে - কেউ উবু হয়ে, কেউ দাঁড়িয়ে বা বসে, কেউ আবার বসা আর দাঁড়ানোর মাঝামাঝি এক হাস্যকর অবস্থায়.... হাততালি সহযোগে হরিগানের পালা শেষ হতেই আকাশ থেকে যেন ফুলঝুরির মতো করে ঝরে পড়তো ছোট-বড়ো-মাঝারি, নানান সাইজের রসালো বাতাসার ঝাঁক - মুহূর্তের মধ্যেই আমরা পাগলের মতো কুড়োতে লেগে যেতাম, চোখের পলক না-ফেলেই আমরা একে-ওকে ঠেলে-ঠুলে, যে যেক'টা পাই হাতে-পকেটে-মুখে ভরে ফেলতাম। ধুলোভর্তি হাতে খাদ্য-দূষণের প্রহেলিকা তখনও আমাদের মাথাতে আসেনি, আর তাছাড়া হরির লুঠের বাতাসায় আবার দূষণ কি !!
সেই একই রকম সমস্যার মুখোমুখি হতাম যখন কপাল গুণে পূজার সময় বাড়ীতে দেব সাহিত্য কুটিরের পূজাবার্ষিকী আসতো চলে। কে আগে পড়বে, কেন আগে পড়বে, কোন গল্প আগে পড়বে সেই নিয়ে ভাই-বোনেদের মধ্যে মোটামুটি একটা খণ্ডযুদ্ধ শুরু হয়ে যেতো !! বাবার হাঁকুনি সময়মতো না-আসলে হয়তো গোটা বইটাই খণ্ড খণ্ড হয়ে যেতো!! তা, সেই রাজাও আর নেই, রাজত্বও আর নেই - পড়ে আছি শুধু আমি, একরাশ স্মৃতি আর বেশ কিছু হারানো দিনের বিবর্ণ হয়ে যাওয়া বইদের নিয়ে।
'বগলা মামা' সিরিজের শেষ গল্প পড়তে গিয়ে 'মণিহার' পূজাবার্ষিকী হাতে করে সেই সব দিনগুলোর কথাই খুব বেশী করে মনে পড়েছে। এই গল্পটি নিয়ে এই ব্লগে আমি সর্বসমেত ১৩টি বগলা মামার অ্যাডভেঞ্চার ব্লগ-পাঠকদের সামনে তুলে ধরলাম। আমার জানা মতে আর কোনও 'বগলা মামা'-র গল্প প্রকাশিত হয়নি - তবে দেব সাহিত্য কুটিরের সবক'টি পূজাবার্ষিকী এখনও আমার নেই - আর তাই দুরাশা আছে যে আমার সেই ধারণা ভুল প্রমাণিত করে কেউ একজন নিশ্চয় এখানে জানাবে যে আরও কিছু 'বগলা মামা' রয়ে গেছে আমাদের মাঝে।
'মণিহার' পূজাবার্ষিকী (১৩৭৭) |
~ ~ ~ ~ ~
বগলা মামার গল্পের সাথে ফাউ হিসাবে রইলো আরও দুটি গল্প। প্রথমটি হলো স্বপনবুড়ো-র লেখা "রুমমেট" - আর দ্বিতীয়টি হলো শৈল চক্রবর্তীর লেখা হাসির গল্প "বাবল বাবল"। দুটি গল্পই একসময় আমার পড়তে বেশ ভালো লাগতো - এখনও লাগে। আশা করি বাকীদেরও নিশ্চয় ভালো লাগবে...
'মণিহার' পূজাবার্ষিকী (১৩৭৭) |
হার্ড বাইন্ডিংয়ের জন্যে স্ক্যান করতে গিয়ে বইটির দু-পাতার মাঝের অংশের লেখা কিছুটা ঝাপসা, আর এঁকেবেঁকে হয়ে গেছে - কিন্তু গল্পের কোয়ালিটির তুলনায় সেই সামান্য ত্রুটি আশা করি পাঠকদেরকে তেমন বিব্রত করে তুলবে না। বইটিকে সময়মতো বাঁধিয়ে ফেলায় এখনও অবধি পঠনযোগ্য অবস্থাতেই রয়ে গেছে, কিন্তু দুঃখের কথা, বইটির কভার পেজটিকে আর ধরে রাখা সম্ভব হয়নি।
ওস্তাদের মার ও অন্যান্য (Size: 14 MB) |
Tomar Ei smriti jagania post gulo Amar smriti k uske dei, ebaro dilo.
ReplyDeleteদারুণ !! "দেবাদিদেব মহাদেবের কলকেটা আপনার হাতে ছিলো ?" পাঞ্চ লাইন !!!
ReplyDeleteThanks Kuntal!! Nice share.
ReplyDeleteThanks Kuntal!! Nice share.
ReplyDelete