শেষ বইমেলায় যেবার গেছিলাম তার সাল-তারিখ মনে না থাকলেও, একটা ঘটনা এখনও আমার মনে বেশ গেঁথে আছে --- রোগামতো, গলায় মাফলার জড়ানো মফস্বলী একটা ছেলে, বইয়ের স্টলে দাঁড়িয়ে একমনে একটা মোটা বই হাতে নিয়ে গভীর মনোযোগে দ্রুত পড়ে যাচ্ছে - খুব সম্ভবত: দেব লাইব্রেরী বা পত্র ভারতীর স্টলে। আশেপাশের লোকজনদের কথাবার্তা, লাউডস্পীকারের তারস্বরে চিল্লানি, বা সেজেগুজে আসা উচ্ছল তরুণীদের দল, কোনোকিছুই তার মনোযোগ বিক্ষিপ্ত করতে পারছে না। সহসাই যেন মনে হলো আমি টাইমমেশিন করে সুদূর অতীতে ফিরে গিয়ে, সতেরো বছর আগেকার সেই 'আমাকেই' যেন আড়াল থেকে দেখে চলেছি !! কিছুক্ষন বাদে বইপড়া শেষ হয়ে গেলে সে বইটি যথাস্থানে সযত্নে গুঁজে রেখে, সাইডব্যাগ বগলে করে হন্তদন্ত হয়ে চলে গেলো ! আর তার সাথে দেখা না হলেও আমি স্থির জানি যে সে আরো বেশ কয়েকটি স্টলে গিয়ে একইরকম ভাবে বই-গিলে, মেলার শেষ প্রহরে বড়োজোর দুটি কি তিনটি সরু-সরু বই কিনে নাচতে নাচতে, বাসে করে ঝুলে বাড়ি ফিরে যাবে। এর থেকে বেশী নতুন বই কেনার ক্ষমতা তার নেই।
ছোটবেলায় বইপড়ার (কু)নেশাটা মাথার মধ্যে ঢুকিয়ে দিয়েছিলেন আমার বাবা স্বয়ং নিজেই। মধ্যবিত্তের বিশাল সংসারে বেসরকারি অফিসে কাজ করে, লোন নিয়ে বাড়ি করার সাথে সাথে, কি অবিশ্বাস্য দু:সাহসের পরিচয় দিয়ে যে তিনি নানান জায়গা থেকে অজস্র পুরানো গল্পের বই কিনে আনতেন, তা আজ ভাবতেই অবাক লাগে !
পুজোর সময় নতুন জামা-কাপড় হোক বা না-হোক, ছেলেমেয়েদের হাতে তিনি নিয়ম করে ঠিকই তুলে দিতেন দেব সাহিত্য কুটীরের মোটা মোটা পূজাবার্ষিকী - যেগুলোর বেশিরভাগই কেনা হতো ঢাকুরিয়ার কাছে, গোলপার্কের পুরানো বইয়ের দোকানগুলো থেকে। দর-দাম করাও যে একটা উচ্চতর আর্টের পর্যায়ে চলে যেতে পারে সেটা নিজের চোখে না-দেখলে, লিখে ঠিক বোঝানো যাবে না !! শরতের পুজোর উচ্ছলতার আনন্দের সাথে মিশে যেতো সাহিত্যপাঠের অনাবিল আনন্দ।
নগর জীবনে হাজার ব্যস্ততার ভিড়ে আজ আমরা বই পড়তেই ভুলে গেছি। বই পড়ার জন্যে সাজ-সরঞ্জামের অভাব আমাদের নেই - পকেটভর্তি টাকা আছে, অ্যামাজন-ফ্লিপকার্ট আছে, কিন্ডল আছে, আইপ্যাড আছে - নেই শুধু ছেলেবেলাকার ফেলে আসা পড়ার সেই মনটা...
আজকের এই পোস্টে রইলো আজ থেকে প্রায় ৫৫ বছর আগেকার দেব সাহিত্য কুটির থেকে প্রকাশিত বিস্মৃতপ্রায় এক পূজাবার্ষিকী, 'অভিষেক' (১৩৫৮ সাল) থেকে তিনটি অমূল্য গল্প -
বইটির অবস্থা দেখতে যতোটা না করুণ লাগছে, বাস্তবে এর চেহারা কিন্তু শতাধিক বেশী করুণ !!
ছোটবেলায় বইপড়ার (কু)নেশাটা মাথার মধ্যে ঢুকিয়ে দিয়েছিলেন আমার বাবা স্বয়ং নিজেই। মধ্যবিত্তের বিশাল সংসারে বেসরকারি অফিসে কাজ করে, লোন নিয়ে বাড়ি করার সাথে সাথে, কি অবিশ্বাস্য দু:সাহসের পরিচয় দিয়ে যে তিনি নানান জায়গা থেকে অজস্র পুরানো গল্পের বই কিনে আনতেন, তা আজ ভাবতেই অবাক লাগে !
প্রথম প্রকাশ: মহালয়া আশ্বিন, ১৩৫৮ (দেব সাহিত্য কুটীর) |
পুজোর সময় নতুন জামা-কাপড় হোক বা না-হোক, ছেলেমেয়েদের হাতে তিনি নিয়ম করে ঠিকই তুলে দিতেন দেব সাহিত্য কুটীরের মোটা মোটা পূজাবার্ষিকী - যেগুলোর বেশিরভাগই কেনা হতো ঢাকুরিয়ার কাছে, গোলপার্কের পুরানো বইয়ের দোকানগুলো থেকে। দর-দাম করাও যে একটা উচ্চতর আর্টের পর্যায়ে চলে যেতে পারে সেটা নিজের চোখে না-দেখলে, লিখে ঠিক বোঝানো যাবে না !! শরতের পুজোর উচ্ছলতার আনন্দের সাথে মিশে যেতো সাহিত্যপাঠের অনাবিল আনন্দ।
নগর জীবনে হাজার ব্যস্ততার ভিড়ে আজ আমরা বই পড়তেই ভুলে গেছি। বই পড়ার জন্যে সাজ-সরঞ্জামের অভাব আমাদের নেই - পকেটভর্তি টাকা আছে, অ্যামাজন-ফ্লিপকার্ট আছে, কিন্ডল আছে, আইপ্যাড আছে - নেই শুধু ছেলেবেলাকার ফেলে আসা পড়ার সেই মনটা...
~ ~ ~ ~ ~ ~ ~
১) ব্যাঘ্রভূমির বঙ্গবীর - শ্রীহেমেন্দ্রকুমার রায়
২) মাউই-এর উপাখ্যান - প্রেমেন্দ্র মিত্র
৩) সত্যবাদিতার পুরস্কার - শিবরাম চক্রবর্তী
বইটির অবস্থা দেখতে যতোটা না করুণ লাগছে, বাস্তবে এর চেহারা কিন্তু শতাধিক বেশী করুণ !!
অভিষেক (তিনটি গল্প) (SIZE: 11.4 MB) |
Koto khujechi ei patrika bole bojhate parbo na, thank you golpo gulo poranor jonyo
ReplyDeleteএই বই থেকে আরও বেশ কিছু গল্প অলরেডি এখানে আপলোড করা আছে !
Delete'অভিষেক' আমরা কেউই কখনও চোখে দেখতে পাব বলে মনে হয় না ।
ReplyDeleteঅসাধারণ এক কাজ করলেন কুন্তল বাবু !
অশেষ ধন্যবাদ ।
Suchipatra ti Paaoaa Jaabe?
ReplyDeleteকুন্তলদা সূচীপত্র ?
ReplyDeleteসূচীপত্রের প্রথম পাতাটা হারিয়ে গেছে - বাকিটা অলরেডি আপলোড করা আছে - প্রথম পাতাটাও হাতে লিখে দিয়ে দিলাম -
ReplyDeleteএই বইটি যে আবার কখনো দেখতে পাবো ভাবিনি। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এই রকন একটি দুষ্প্রাপ্য বইকে আমাদের সামনে তুলে ধরার জন্য।
ReplyDelete