Wednesday, November 19, 2014

লালচুল - মনোজ বসু

ভরা বর্ষার রাতে বাড়ির বড়োদের মুখে ভূতের গল্প শুনে ভয়ে ঠক ঠক করে কাঁপার মতো অনুভূতি এ যুগের ছেলেমেয়েদের মধ্যে কখনো হয়েছে, বা আদৌ কখনো হবে কি না, সে নিয়ে আমার ঘোরতর সন্দেহ আছে।  তবে আমাদের ছোটবেলায় এরকম ঘটনা অজস্রবার ঘটেছিলো। ভূতের ভয়ে আমরা, অর্থাৎ পিঠোপিঠি ভাই-বোনেরা, সবাই মিলে এক খাটে জড়াজড়ি করে শুয়ে কতোবার যে এক-ঘুমে রাত কাটিয়ে দিয়েছি তার ঠিক নেই ! সেই ভয় পাওয়াতে এক অদ্ভুত আনন্দ লুকিয়ে থাকতো। আবার, পরের দিন সকালে উঠে আগের রাতের ভয় পাওয়া নিয়ে ভেবে নিজেদের মধ্যেই সে কি হাসাহাসি !! 



বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শক্তিশালী কথা-সাহিত্যিক  মনোজ বসুর জন্ম হয়ে ছিলো ১৯০১ সালে যশোর জেলার ডোঙ্গাঘাটা গ্রামে। মনোজ বসুর শৈশবের বোধোদয় ঘটে ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গ আন্দোলন উত্তরকালে। তাঁর পিতা,রামলাল বসু ছিলেন স্বাধীনচেতা মানুষ। 
মনোজ বসু (১৯০১ - ১৯৮৭)
পিতার স্বাধীনচেতা মানসিকতা পুত্রের মধ্যেও সঞ্চারিত হয় ছাত্রজীবনে। রামলাল বসু কবিতা লিখতেন। পুরুষানুক্রমে লেখালেখির বীজ মনোজ বসুর রক্তের মধ্যে নিহিত ছিলো। পিতার মতোই কবিতা দিয়ে মনোজ বসুর সাহিত্যচর্চার যাত্রা শুরু হয়েছিলো, পরে তাঁর লেখনী থেকে নির্মিত হয়েছিলো অসংখ্য অসাধারণ গল্প এবং আরো পরে উপন্যাস। 

মাত্র আট বছর বয়সে পিতার মৃত্যু বালক মনোজ বসুর জীবনকে ভয়ংকর অবস্থায় ফেলে দেয়। দারিদ্রের চরম যন্ত্রণা তাঁর ছাত্রজীবনকে টালমাটাল করে তোলে। অনেক চড়াই উৎরাই পেরিয়ে তবে তিনি বাংলা সাহিত্যে স্থায়ী আসন লাভ করতে সক্ষম হয়েছিলেন।

কলকাতা জীবনের পরবর্তী কালের সাফল্য ও প্রতিষ্ঠা কিন্তু মনোজ বসুর গ্রামবাংলার স্মৃতিকে ভোলাতে পারেনি। তিনি অসাধারণ মুগ্ধতায় ও সহজ সরল ভাষায় গ্রামবাংলার নানা ছবি অঙ্কন করে গেছেন তাঁর লেখা গল্প ও উপন্যাস গুলিতে। 



কিছু কিছু ভূতের গল্প আছে যা পড়ে ভয় পাবার সাথে সাথে কিছুটা দু:খ বা মায়াও জাগে মনে। তাই গল্প শেষ হয়ে যাবার পরেও এক অদ্ভুত আবেশে মন আচ্ছন্ন হয়ে থাকে। বাংলা সাহিত্যের কথা-সাহিত্যিক মনোজ বসুর "লালচুল" গল্পটি হলো সেরকমই এক মর্মস্পর্শী ভূতের গল্প। একসময় এই গল্পটি পড়তে আমার খুবই ভালো লাগতো। সেই গল্পটি আজ আপলোড করা হলো।  

লাল চুল









No comments:

Post a Comment