![]() |
প্রকাশক: দেব সাহিত্য কুটীর |
ফলত: কিছুদিনের মধ্যেই ক্লাসের মধ্যে তিনটে গ্রুপ হয়ে গেলো। মুষ্টিমেয় কিছু যারা ক্লাস চলাকালীন লুকিয়ে লুকিয়ে গল্পবই পড়ে - 'হা-ভাতে' গোছের আমরা অর্থাৎ যারা পড়তে চেয়েও পড়তে পাইনা - আর বাদবাকি ত্যাঁদোড় টাইপের কিছু, যারা টিচার সহ এই দুটো গ্রুপের কাউকেই তেমন কেয়ার করে চলেনা। তো একদিন সেই 'অভুক্ত', দ্বিতীয়-গ্রুপের কেউ একজন স্যারের কাছে বেনামী চিঠিতে জানিয়ে দিলো এই গুপ্ত বই সরবরাহের ব্যাপারখানা। ফলে যা হবার তাই হলো, একদিন ক্লাস চলাকালীন আমাদের ভূগোল স্যার একেবারে হাতে-নাতে ধরে ফেললেন 'পালের গোদা' আমার সেই ক্লাসমেটকে। সে তখন নিবিষ্ট চিত্তে একখানা গল্পের বই পড়ে চলেছিলো। স্যার বোধহয় এসেছিলেন প্ল্যান করেই, আর যায় কোথা!! কান ধরে তাকে ক্লাস থেকে হিড়-হিড় করে টেনে নিয়ে যাবার সময় দেখা গেল ভূগোল স্যারের হাতে ধরা রয়েছে দেব সাহিত্য কুটিরের একখানা গোয়েন্দা কাহিনীর বই, নাম 'অস্তাচলের পথে'।
বইখানা স্যার টিচার্স রুমের এক ড্রয়ারে তালাবন্দী করে রেখে দিলেন। বিকট কান্নাকাটি জুড়ে দিয়েও সে শাস্তির হাত থেকে রেহাই পেলো না। অজস্র কানমলা, চড়-চাপড়ের সাথে সাথে তার বই বাজেয়াপ্ত তো হযে গেলোই, উল্টে তাকে ক্লাসের একদম প্রথম সারির বেঞ্চে বসার আদেশ দেওয়া হলো। যদিও আমি সেসময় তার স্নেহভাজন-গ্রুপে থাকার সৌভাগ্য লাভ করে উঠতে পারিনি, তবুও এক অদ্ভুত কারণে তার এই শাস্তির বহর দেখে আমার বেশ মন খারাপ হয়ে গেলো। বিশেষ করে তার সেই বই বাজেয়াপ্ত হয়ে যাবার ব্যাপারখানা আমাকে বেশ ব্যথিত করে তুলেছিলো। পরবর্তী কালে অবশ্য তার সাথে আমার ধীরে ধীরে ভালো বন্ধুত্ব গড়ে উঠেছিলো, আর প্রচুর গল্পের বইও পড়েছিলাম তার সৌজন্যে।
এই ব্লগে আমি সেই হারানো দিনের ডিটেকটিভ উপন্যাসটি পোস্ট করলাম। এটি অবশ্য পরবর্তীকালে দেব সাহিত্য কুটীর থেকে নতুন কলবরে প্রকাশিত প্রহেলিকা সিরিজের দ্বিতীয় সংকলনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এই কাহিনীটি লিখে ছিলেন 'সব্যসাচী', অর্থাৎ আমাদের সবারই প্রিয়, শ্রদ্ধেয় শ্রী সুধীন্দ্রনাথ রাহা মহাশয়।
![]() |
অস্তাচলের পথে
(30.4 MB)
|