সাধু কালাচাঁদের সৃষ্টিকর্তা: শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায় |
শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায় বিশ্বাস করতেন ঘটিত সত্যই একমাত্র সত্য নয়। যা হলেও হতে পারে, এমনটিও শিল্পের সত্য। বাস্তবের সত্য আর শিল্পের সত্য পুরোপুরি আলাদা। নিজের যাবতীয় লেখালেখিতেই শ্যামলবাবু এই বিষয়টিকে সামনে নিয়ে এসেছেন।
'সাধু কালাচাঁদ'-এর বীজ কি লুকিয়ে ছিলো 'ক্লাস সেভেনের মিস্টার ব্লেক'-এর মধ্যে? কালাচাঁদের পূর্বসুরী বাংলা সাহিত্যে সম্ভবত একজনও নেই। খুব ক্ষীণ যোগাযোগ থাকলেও থাকতে পারে সুকুমার রায়ের পাগলা দাশুর সঙ্গে। কিন্তু সেই সম্পর্ক নেহাৎই 'গ্রাম-সম্পর্ক', নিশ্চিতভাবেই 'জ্ঞাতি-সম্পর্ক' নয়।
শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায় বিশ্বাস করতেন দৈবী পাগলামি ছাড়া শিল্প সৃষ্টি করা যায় না। সেই দৈবী পাগলামির বিচিত্র বর্ণালী তাঁর এই সব গল্পে, ছোট উপন্যাসে। সত্তর দশকের শেষের দিকে দেব সাহিত্য কুটিরের একটি পুজাবার্ষিকীতে প্রকাশিত হয়েছিলো কালাচাঁদের একটি বড় গল্প: 'সাধু কালাচাঁদের মেদিনীপুরাণ' - বাংলা ভাষায় এমন সুন্দর লেখা খুব অল্পই হয়েছে। সামনে ক্লাস টেনের প্রিটেস্ট। চন্দ্রগ্রহণের দিন চৈতন্যদেবের জন্মদিন। এইসব ঘটনা কোশ্চেন লিক করতে না-পারা কালাচাঁদকে বিবাগী করে তোলে। তখন সে মাথা কামিয়ে শ্রীচৈতন্যের পরিক্রমার রাস্তা ধরে, মেদিনীপুর হয়ে শ্রীক্ষেত্র-নীলাচলের দিকে পদব্রজে রওনা হতে চায় - অসাধারণ সুন্দর ছিলো সেই গল্পটি।
এইসব গল্প পড়তে পড়তে কল্পনার ডানায় ভর দিয়ে অনায়াসেই উড়ে যাওয়া যায় অন্য কোনো এক ভুবনে। কোথাও অনর্থক কিশোরী চরিত্র এনে সুড়সুড়ি দেওয়া নেই - নেই ঘুঁষোঘুঁষি বা বন্দুক-পিস্তলের অহেতুক গর্জন। বরং আছে মানুষের চিরকালীন, শাশ্বত জীবন সত্য, যা পড়তে পড়তে পাঠকেরা অনেকেই ফিরে পাবেন তাঁদের হারানো ছেলেবেলা। যারা বড়ো হচ্ছে, পড়তে চাইছে বা তৈরী হয়েছে পড়ার অভ্যাস, সাধু কালাচাঁদ তাদের কাছে এক অমূল্য সম্পদ।
'সাধু কালাচাঁদ সমগ্র'' বইটি প্রকাশের কথা ছিলো শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায় বেঁচে থাকতে থাকতেই - কিন্তু একটু দেরীই হয়ে গিয়েছিলো। আজ শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায় আমাদের মধ্যে আর নেই - আবার আছেনও। কারণ কালাচাঁদ তো আছে - সাধু কালাচাঁদ চিরকালই বেঁচে থাকবে আমাদের মধ্যে।
এই ব্লগে আমি সেই হারানো দিনের 'সাধু কালাচাঁদের' দশটি ছোট গল্প দুটি পর্বে পোস্ট করলাম। সূক্ষ হাস্যরস, আর অসম্ভব ভালোলাগায় ভরপুর এই গল্পগুলো সবারই কম-বেশী ভালো লাগবে।
সাধু কালাচাঁদ (১-৬) |
সাধু কালাচাঁদ (৭-১০) |
valo laglo .................. chotobelai jokhon porechilam tokhon kintu oto valo lagto na ............ infact sahu kalachander golpo khub akta portam na .................. kintu akhon notun kore porar por bes valoi laglo ............... dhanyobad kuntalda
ReplyDeleteঠিকই বলেছেন - আমিও অনেক পরে দু'বার করে 'সাধু কালাচাঁদ' পড়া শুরু করেছিলাম। আরও দুটো গল্প এখানে আপলোড করে দিলাম।
Deleteএরকম uncommon কিছু কিছু, বিচিত্র স্বাদের গল্প আপলোড করার ইচ্ছা আছে - দেখা যাক....
Khub Sundor...
ReplyDeleteঅসংখ্য ধন্যবাদ কুন্তল - জানি সব বইই আজকাল কিনতে পাওয়া যায়, কিন্তু ইন্টারনেটে এতো সহজে এত ভালো ভালো গল্প পড়বার মজাটাই আলাদা...
ReplyDeleteThanks for sharing this story....
ReplyDeleteক্লাস সেভেনের মিস্টার ব্লেক সার্চ করতে গিয়ে এখানে এসে পড়লাম, আর এসে পড়ে যারপরনাই আনন্দিত হলাম। অনেক ধন্যবাদ! ব্লেকের বইটা সেই ছোটবেলায় পড়েছিলাম - এখন কোথাও আর পাচ্ছি না। আপনার কাছে কোনো সন্ধান থাকলে জানাবেন প্লিজ?
ReplyDeleteব্লগে আসার জন্যে অনেক ধন্যবাদ। কিন্তু, "ক্লাস সেভেনের মিস্টার ব্লেক"-এর গল্পটি আমার কাছেও নেই - তবে শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়ের লেখা সাধু কালাচাঁদের আরো কিছু গল্প আছে - সেগুলি কখনো একসময় আপলোড করে দেবো।
Deleteঅবশ্যই| আবারও ধন্যবাদ!
ReplyDeleteSadhu kalachand er baki golpo gulo paoa jabe? Ami boita onek khujechi. College street e Deys er dokaneo giyechilam. Paini. Deb Sahityo kutir theke je sharodiya gulo beroto, poroborti somoi sharodiya shuktara te Kalachand er golpo pore khub ananda peyechi. Jodi baki golpo gulo upload kore badhito hobo
ReplyDeleteএই উইকেন্ডের দিকে স্ক্যান করে দেবো - Thanks for visiting my blog.
Deleteআপাতত: আরও চারটি গল্প আপলোড করে দিলাম - চলতে থাকুক গল্প পড়া...
Delete