ছবির গল্প পড়ে ভয় পাওয়ার ব্যাপারটা প্রথম শুরু হয়েছিলো টিনটিনের "মমির অভিশাপ"-এর সেই দুর্ধর্ষ চরিত্র 'রাসকার কাপাক"-কে দেখে। সেই সময়ে ঘুমের মাঝেও অনেকবার (দু:)স্বপ্ন দেখে চমকে গিয়ে জেগে উঠতাম। মন্ত্রবলে মানুষকে অবশ করে দেওয়ার ঘটনা অবশ্য বেতালের (তান্ত্রিক হুগান) কাহিনীতেও আছে, কিন্তু সেখানে গা-ছমছমের কোনও ব্যাপার ছিল না। ময়ূখ চৌধুরীর "আগন্তুক" পড়েও কিছুটা রোমাঞ্চ জেগেছিলো, কিন্তু সেটা রাসকার কাপাকের মতো করে নয়। ইনকাদের প্রতি নতুন করে আগ্রহ জাগিয়ে তুলেছিলো টিনটিনের "সূর্য্যদেবের বন্দি"।
ছোটবেলায় টিনটিন পড়তে গিয়ে "Ligne Claire" বলে যে কোনও কিছু থাকতে পারে সে বিষয়ে কোনও ধারনাই ছিলো না। কারণ গল্পগুলো অ্যাতোটাই টানটান আর আকর্ষণীয় ছিল যে কমিকস পড়ছি বলে মনেই হতো না। অনেকে বলেন যে আমাদের দেশের "টিম্পা"ও নাকি টিনটিনের মতোই আকর্ষণীয় চরিত্র - কিন্তু টিম্পার গল্প পড়ে আমার কখনোই আহামরি বলে মনে হয়নি। স্পীচ বাবলের আধিক্য যে কমিকসের ক্ষতি করে, সেটা অনেক কমিকস-লেখকই খেয়াল রাখেন না। টিনটিনের সাথে বরং একমাত্র সত্যজিৎ রায়ের গোয়েন্দা ফেলুদার অ্যাডভেঞ্চারগুলোকেই এক সারিতে রাখা যায়।
১৯৩৪ সালের আগের টিনটিন আর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তী কালের টিনটিনের মধ্যে বেশ পার্থক্য ছিলো। হার্জ এর চিন্তাধারার আমূল পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায় তরুণ টিনটিনের পরবর্তীকালের ভ্রমন কাহিনীগুলোতে। মজার ব্যাপার হলো টিনটিনের কাহিনীগুলি পড়ে কিন্তু বোঝা যায় না যে সে আসলে ইউরোপের কোন দেশের নাগরিক - এমন কি সাংবাদিক টিনটিনের চরিত্রের মধ্যে বিশেষ কোনো ধর্মের প্রতি আনুগত্য খুঁজে পাওয়া যায় না। সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে টিনটিনের শেষের দিকের অভিযানগুলো আরও তথ্যবহুল, পরিণত এবং মজাদার হয়ে উঠেছে। খুব জানতে ইচ্ছা করে যে আজ যদি হার্জ আমাদের মধ্যে বেঁচে থাকতেন তো টিনটিনকে তিনি একবিংশ শতাব্দীর কোন আন্তর্জাতিক ঘটনার মধ্যে নিয়ে গিয়ে ফেলতেন।
টিনটিনকে নিয়ে করা স্পিলবার্গের অ্যানিমেশান ম্যুভি দেখেও আমার দারুণ লেগেছিলো, তবে আমি খুব আশা করেছিলাম যে প্রফেসর ক্যালকুলাসকেও সেখানে দেখতে পাবো। লালমোহন বাবু ছাড়া যেমন ফেলুদার কাহিনী অসম্পূর্ণ থেকে যায়, তেমনি প্রফেসর ক্যালকুলাস ছাড়া টিনটিনের গল্প ঠিক ভাবা যায় না। তবে স্পিলবার্গ তাঁর নিজের মতো করে টিনটিনের তিনটি গল্পকে একসাথে মিশিয়ে ম্যুভিটি তৈরী করেছিলেন, যেটা অনেক টিনটিন ভক্তরাই ভালো চোখে দেখেননি। তবে 3D অ্যাকশনে ভরা কাহিনীর গতি ছিলো বেশ আকর্ষণীয়, আর গ্রাফিক্স, শব্দ এবং অ্যানিমেশন নিয়ে কোনও কথা হবে না !!
আমাদের আজকের এই পোস্টে রইলো টিনটিনের এক ইন্দোনেশিয়ান ভক্ত, কাকা রাই-এর লেখা ও আঁকা টিনটিনের আরেকটি নয়া অভিযান, "অজগরের মুখোমুখি" - তবে এই ধরণের সংক্ষিপ্ত গল্পগুলিকে হার্জের লেখা টিনটিনের মূল গল্পদের সাথে তুলনা করাটা উচিত হবে না, এগুলোকে স্রেফ ফ্যান-ফিকশান (pastiche) হিসাবে পড়াই ভালো !
এই গল্পে দেখা যায় যে মার্লিনস্পাইকে হঠাৎ করে এক বিশাল অজগর সাপের আবির্ভাব ঘটেছে - ঘটনাক্রমে সে জনসনকে গিলে খেয়ে ফেলার উপক্রম করেছে, এমন সময় কাকা রাই ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে, এক দারুণ উপায়ে সেই সাপকে ঘায়েল করে ফেলে... কিভাবে ? সেটা জানতে গেলে তো আমাদেরকে পড়তেই হবে টিনটিনের এই নয়া অভিযানটি।
এই কমিকসটির প্রচ্ছদপট অলংকরণে সহায়তা করেছেন আমাদের সকলের প্রিয় রূপক ঘোষ মহাশয়। অনেক ধন্যবাদ ও প্রশংসা রইলো তাঁর জন্যে...
ছোটবেলায় টিনটিন পড়তে গিয়ে "Ligne Claire" বলে যে কোনও কিছু থাকতে পারে সে বিষয়ে কোনও ধারনাই ছিলো না। কারণ গল্পগুলো অ্যাতোটাই টানটান আর আকর্ষণীয় ছিল যে কমিকস পড়ছি বলে মনেই হতো না। অনেকে বলেন যে আমাদের দেশের "টিম্পা"ও নাকি টিনটিনের মতোই আকর্ষণীয় চরিত্র - কিন্তু টিম্পার গল্প পড়ে আমার কখনোই আহামরি বলে মনে হয়নি। স্পীচ বাবলের আধিক্য যে কমিকসের ক্ষতি করে, সেটা অনেক কমিকস-লেখকই খেয়াল রাখেন না। টিনটিনের সাথে বরং একমাত্র সত্যজিৎ রায়ের গোয়েন্দা ফেলুদার অ্যাডভেঞ্চারগুলোকেই এক সারিতে রাখা যায়।
টিনটিন - অজগরের মুখোমুখি (২০১৫) |
১৯৩৪ সালের আগের টিনটিন আর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তী কালের টিনটিনের মধ্যে বেশ পার্থক্য ছিলো। হার্জ এর চিন্তাধারার আমূল পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায় তরুণ টিনটিনের পরবর্তীকালের ভ্রমন কাহিনীগুলোতে। মজার ব্যাপার হলো টিনটিনের কাহিনীগুলি পড়ে কিন্তু বোঝা যায় না যে সে আসলে ইউরোপের কোন দেশের নাগরিক - এমন কি সাংবাদিক টিনটিনের চরিত্রের মধ্যে বিশেষ কোনো ধর্মের প্রতি আনুগত্য খুঁজে পাওয়া যায় না। সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে টিনটিনের শেষের দিকের অভিযানগুলো আরও তথ্যবহুল, পরিণত এবং মজাদার হয়ে উঠেছে। খুব জানতে ইচ্ছা করে যে আজ যদি হার্জ আমাদের মধ্যে বেঁচে থাকতেন তো টিনটিনকে তিনি একবিংশ শতাব্দীর কোন আন্তর্জাতিক ঘটনার মধ্যে নিয়ে গিয়ে ফেলতেন।
টিনটিনকে নিয়ে করা স্পিলবার্গের অ্যানিমেশান ম্যুভি দেখেও আমার দারুণ লেগেছিলো, তবে আমি খুব আশা করেছিলাম যে প্রফেসর ক্যালকুলাসকেও সেখানে দেখতে পাবো। লালমোহন বাবু ছাড়া যেমন ফেলুদার কাহিনী অসম্পূর্ণ থেকে যায়, তেমনি প্রফেসর ক্যালকুলাস ছাড়া টিনটিনের গল্প ঠিক ভাবা যায় না। তবে স্পিলবার্গ তাঁর নিজের মতো করে টিনটিনের তিনটি গল্পকে একসাথে মিশিয়ে ম্যুভিটি তৈরী করেছিলেন, যেটা অনেক টিনটিন ভক্তরাই ভালো চোখে দেখেননি। তবে 3D অ্যাকশনে ভরা কাহিনীর গতি ছিলো বেশ আকর্ষণীয়, আর গ্রাফিক্স, শব্দ এবং অ্যানিমেশন নিয়ে কোনও কথা হবে না !!
~ ~ ~ *ঁ* ~ ~ ~
আমাদের আজকের এই পোস্টে রইলো টিনটিনের এক ইন্দোনেশিয়ান ভক্ত, কাকা রাই-এর লেখা ও আঁকা টিনটিনের আরেকটি নয়া অভিযান, "অজগরের মুখোমুখি" - তবে এই ধরণের সংক্ষিপ্ত গল্পগুলিকে হার্জের লেখা টিনটিনের মূল গল্পদের সাথে তুলনা করাটা উচিত হবে না, এগুলোকে স্রেফ ফ্যান-ফিকশান (pastiche) হিসাবে পড়াই ভালো !
এই গল্পে দেখা যায় যে মার্লিনস্পাইকে হঠাৎ করে এক বিশাল অজগর সাপের আবির্ভাব ঘটেছে - ঘটনাক্রমে সে জনসনকে গিলে খেয়ে ফেলার উপক্রম করেছে, এমন সময় কাকা রাই ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে, এক দারুণ উপায়ে সেই সাপকে ঘায়েল করে ফেলে... কিভাবে ? সেটা জানতে গেলে তো আমাদেরকে পড়তেই হবে টিনটিনের এই নয়া অভিযানটি।
এই কমিকসটির প্রচ্ছদপট অলংকরণে সহায়তা করেছেন আমাদের সকলের প্রিয় রূপক ঘোষ মহাশয়। অনেক ধন্যবাদ ও প্রশংসা রইলো তাঁর জন্যে...
Bah...Kaka Rai Er Aro Ekta Pastiche Translation...Darun Kuntal Da...BTW Kaka Rai Er Total Kotogulo pastiche Ache???
ReplyDeleteকাকা রাই আপাতত: শেষ - আরও কিছু pastiche আছে, কিন্তু সেগুলো ইংরেজীতে নয় !!
DeleteDarun, darun - many thanks Dada...
ReplyDeleteThank you for the nice posting.
ReplyDeleteধন্যবাদ আপনাকে এই রকম বিরল বই পাঠকদের উপহার দেবার জন্য।
ReplyDelete